অনশন মঞ্চে আজ চন্দ্রবাবুর সঙ্গে দেখা করেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধি, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা। এছাড়া আজ অনশন মঞ্চে যান তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও' ব্রায়েন। তিনি টুইট করেন, "চন্দ্রবাবু নাইডুর সমর্থনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে আমি এখানে এসেছি।"
অনশন মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করে চন্দ্রবাবু বলেন, "অন্ধ্রপ্রদেশ নিয়ে রাজধর্ম পালন করছেন না প্রধানমন্ত্রী। রাজ্যকে স্পেশাল স্ট্যাটাস দিতে অস্বীকার করেছে তাঁর সরকার। আপনি কেন নিজের প্রতিশ্রুতি রাখছেন না ?" এরপরই তিনি বলেন, আপনি যদি স্পেশাল স্ট্যাটাস না দেন, আমরা জানি কী ভাবে তা পেতে হবে।
দিল্লির অন্ধ্রপ্রদেশ ভবনে অনশনে বসার আগে চন্দ্রবাবু রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধির মূর্তিতে মাল্যদান করেন। অন্ধ্রপ্রদেশ ভবনে আম্বেদকরের মূর্তিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। সূত্রের খবর, তিনি আগামীকাল (১২ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেবেন।
২০১৪-তে অন্ধ্রপ্রদেশ ভেঙে তেলাঙ্গানা গঠন হয়। চন্দ্রবাবু বলেন, সেইসময় কেন্দ্র অন্ধ্রপ্রদেশকে স্পেশাল স্ট্যাটাস দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু বছরের পর বছর কেটে গেলেও মোদি সরকার প্রতিশ্রুতি রাখেনি। গতবছর NDA ছেড়ে বেরিয়ে আসে চন্দ্রবাবুর দল তেলুগু দেশম পার্টি (TDP)। কারণ হিসেবে কেন্দ্রকে আক্রমণ করে চন্দ্রবাবু বলেছিলেন, পৃথক তেলাঙ্গানা গঠনের পর তাঁদের রাজ্যের সঙ্গে অবিচার করা হয়েছে। NDA ছড়ার পর গতবছর মার্চে বাদল অধিবেশনে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবও এনেছিলেন TDP সাংসদরা।
চন্দ্রবাবুর অভিযোগ অবশ্য খারিজ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গতকাল অন্ধ্রপ্রদেশে এক সভায় তিনি বলেন, অন্ধ্রপ্রদেশকে স্পেশাল স্ট্যাটাস দেওয়ার সম্ভাব্য সবরকম চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু উলটে চন্দ্রবাবুই সহযোগিতা করেননি। তিনি রাজ্যের উন্নয়নের জন্য বিশেষ কোনও পরিকল্পনাও নেননি। কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের খরচ বাবদ হিসাবের নথিও জমা করেননি। চন্দ্রবাবু কেন্দ্রকে আক্রমণ করে শুধুই মিথ্যাচার করেছেন।
পাঁচ বছর আগেও চন্দ্রবাবু অনির্দিষ্টকালের জন্য দিল্লির অন্ধ্রপ্রদেশ ভবনে অনশনে বসেছিলেন। দাবি ছিল, অন্ধ্রপ্রদেশ ভেঙে তেলাঙ্গানা রাজ্য গঠন করা হলে কাউকেই বঞ্চিত করা যাবে না। দুই রাজ্যের প্রতি সমান বিচার করতে হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শারীরিক অবনতির কারণে পাঁচ দিনের মাথায় অনশন তুলে দেওয়া হয়। অসুস্থ চন্দ্রবাবুকে তখন রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছিল।